সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নিজেকে সময় দিন খুঁজে পান নতুন "আমিকে"!

নিজেকে সময় দিন খুঁজে পান নতুন "আমিকে"!

চিত্রঃ সুগন্ধী ফুল
বেলি ফুল
পড়ালেখা আর কর্মব্যস্ত সংসারের এই ব্যস্ত শহরে আজ দম ফেলার সময় নেই কারোই। দিনের পর দিন একই রুটিনে কাজ করতে করতে ক্লান্ত আমরা সবাই। ছুটির দিনটায় বিছানায় মুখ গুঁজে ঘুম, বা বাজার সদাই করা বা কোন আত্মীয় স্বজনদের দেখতে যাওয়া। শেষবার কবে শুধু নিজের জন্য সময় কাটিয়েছেন হয়তো মনেই করতে পারছেন না।
এভাবে ছুটতে ছুটতে হয়তো আর নিজের যত্ন নেয়ার সময়ই পাচ্ছেন না। দুঃখজনক হলেও সত্যি, উচ্চবিত্তদের জীবনে এই নিজের মত করে থাকার জন্য আছে অনেক সুযোগ। দামি কোন পার্লারে বসে পুরো একটা স্পা প্যাকেজ বুকিং দিলেই চোখ বুজেই তারা কাজটি সেরে ফেলতে পারেন। আপনি উচ্চবিত্ত নন, তাই বলে আপনি সেটা করতে পারবেন না তা কেন হবে। শুধু একটু খানি ইচ্ছা আর বুদ্ধি খাটিয়েই আপনি নিজেই করতে পারেন এসব কিছু, আর খরচ? সেতো আপনার হাতের নাগালেই।

১। সপ্তাহের যেকোনো দিন আপনি বেছে নিতে পারেন, ছুটির দিন হলে ভালো। বৃহস্পতিবার রাতের সময়টা হলে বেশি ভাল হয়। বাইরে থেকে ফেরার সময় অথবা দিনের বেলায়ই কাউকে দিয়ে কিনে নিন কয়েকটি গোলাপ বা রজনীগন্ধা বা আপনার পছন্দের যেকোনো ফুল। বাড়ি ফিরে সেগুলো রেখে দিন আপনার বিছানার পাশের ফুলদানিতে। আর অল্প কিছু ফুলের পাপড়ি রেখে দিন আপনার বাথটাবে অথবা বালতিতে।
চিত্রঃ পরিপাটি বিছানা


২। বাড়ি ফিরেই প্রথমে ঘর গুছিয়ে নিন। তারপরে ঝটপট তৈরি করে নিন আপনার প্রিয় কোন ফলের জুস অথবা প্রিয় কোন স্ন্যাক্স। সময় কম থাকলে চাইলে এগুলো বাইরে থেকেই নিয়ে আসতে পারেন।

৩। হাতে অন্তত ২ ঘণ্টার মত সময় রাখুন, এই সময়টাতে অন্য কোন কাজে যাতে যেতে না হয়, সেরকম ব্যাকআপ প্ল্যান করে রাখুন।

৪। ভালমতো হাতমুখ ঠান্ডা পানিতে পরিষ্কার করে মুছে নিন। রুমে ঢুকে চালিয়ে দিন কোন মিউজিক।

৫। প্রথমেই চুলে কোন একটি ভালো সুগন্ধি তেল ম্যাসাজ করুন ১০ মিনিটের মত। লেবুর রসের সাথে ১ টি ডিম মিশিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে নিয়ে শাওয়ার ক্যাপ পরে নিন। এই প্যাকটি চুলে প্রায় ৩০ মিনিট রাখা যায়। এছাড়া ও চুলের যত্নে দ্রুত করা যায় এমন যেকোন হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
চিত্রঃকিছুটা সময় রাখুন নিজের জন্য
কিছুটা সময় রাখুন নিজের জন্য
৬। সামান্য অলিভ অয়েল দিয়ে পুরো মুখ ম্যাসাজ করুন ৫ মিনিট। এবারে ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। চালের গুঁড়ো, গোলাপজল আর সামান্য হলুদ বাটা দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে সারা মুখে ম্যাসাজ করুন ৫ মিনিট। পরে ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।

৭। এবার আপনার ত্বকের ধরন বুঝে একটি প্যাক লাগান মুখে। ফেসপ্যাকটি শুকাতে যে সময় লাগবে সেই সময়ে কুসুম গরম পানিতে হাত-পা ডুবিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। পানিতে মেশাতে পারেন লেবুর রস ও শ্যাম্পু। যাদের টনসিল বা সাইনাসের সমস্যা আছে তারা চাইলে এইধাপ এড়িয়ে হাতে, তখন হাতে পায়ে লেবুর রস লাগিয়ে অপেক্ষা করুন।

৮। এবারে একটি লুফায় প্রয়োজন মত শাওয়ার জেল নিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিন। পিউমিস স্টোন দিয়ে পা পরিষ্কার করে নিন। হাত-পায়ের নখ ও এসময় কেটে নিতে পারেন।

৯। এতক্ষনে আপনার ফেসপ্যাক শুকিয়ে গেছে। হালকা গরম পানির ঝাপটা দিয়ে হালকা হাতে ঘষে তুলে ফেলুন। এরপর গোলাপজল দিয়ে মুখ মুছে নিন। অথবা এক টুকরো বরফ ঘষে নিন।


চিত্রঃ শাওয়ার টাব
১০। এবার সোজা চলে যান স্নানঘরে। চুল শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। শাওয়ার জেল ব্যবহার করাটা অতিরিক্ত খরচ মনে মনে করলে প্রতিদিন ব্যবহার না করে সপ্তাহে একবার করুন। বেশি খরচও হবে না আবার শাওয়ার জেলের ঘ্রানে মনটাও হবে ফুরফুরে। অথবা কোন সুগন্ধী সাবান ও ব্যবহার করতে পারেন।

১১। বাথটাব থাকলে চুপ করে পানিতে গা এলিয়ে দিয়ে মৃদু লয়ের কোন গান শুনুন। বাথটাব নেই? শাওয়ার এর নিচে দাঁড়িয়ে ঠিক ঘাড়ের ওপর পানির ধারা পড়তে দিন ৫ মিনিট। সারা দিনের ক্লান্তি অনেকখানি কমে যাবে। এইসময় কোন দুশ্চিন্তা না করে নিজের প্রিয় মানুষের কথা ভাবুন।

১২। তারপর যথারীতি একটা পরিষ্কার কাপড় পরে বেড়িয়ে আসুন। ভালোমতো হাতে ,পায়ে মশ্চরায়জার লাগিয়ে চুল শুকিয়ে নিন। এইসময় নিজের পছন্দের গান শুনতেও পারেন। আপনি যদি ডায়েট করেন তাহলে আজকেও সেটি বজায় রেখে পছন্দের কোন পুষ্টিকর খাবার খেয়ে নিন।

১৩। খাওয়া শেষ করে প্রিয় মানুষটির সাথে সময় কাটান। আপনি যদি পরিবাররে সাথে থাকেন তাহলে ঘুমানোর আগে তাদের সাথে কিছুক্ষন আড্ডা দিতে দিতে জরুরী কথা ও সেরে নিতে পারেন।

১৪। প্রতিদিনের মতোই নিদির্ষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান। আপনি যদি চাকুরীজীবী হন তাহলে ঘুমানোর আগে কোন প্রিয় লেখকের বই পড়তে পারেন সপ্তাহের এই সময়টুকুতে। তখন পাশে রাখতে পারেন কোন সুগন্ধী মোম আর ফুল ।

ভাবছেন এতো সাধারন কথা এতো আয়োজন করে কেন লেখা হল? কারণটা এই আমরা যারা মধ্যবিত্ত, তারা প্রায় সময়ই অন্যদের দেখে ডিপ্রেসড হয়ে যাই। সারাক্ষন কাজের পেছনে ছুটে আমরা নিজদের দিকে তাকানোর সময় পাই না। যার প্রভাব পরে আমাদের কাজে ও আচরণে। তাই নিজেকে এই সময়টুকু দেয়ার মাধ্যমে আমরা খুঁজে পাবো নিজেকে। নিজেকে আবার পরের সপ্তাহের জন্য তৈরি করতে পারবো। আয়নায় নিজের ক্লান্ত চেহারার বদলে একটি উজ্জ্বল মুখ দেখলে নিজের কাছেই নিজেকে নতুন বলে মনে হবে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

খাটো মেয়েদের জন্য ফ্যাশন টিপস

খাটো মেয়েদের জন্য ফ্যাশন টিপস প্রাকৃতিক ও জলবায়ুর পরিবর্তন, খাবারে রাসায়নিক দ্রব্যের প্রভাব ইত্যাদি কারণে মানুষের আকার দিন দিন কমে আসছে। যে সকল মেয়েদের উচ্চতা কম তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হীনমন্যতায় ভুগেন।  কম উচ্চতার মেয়েরাও হতে পারেন আকর্ষণীয় ফ্যাশনের অধিকারী। তারা যদি তাদের ব্যবহার্য জিনিসপত্র নির্বাচনে একটু সচেতন হোন তাহলে আপাতত দৃষ্টিতে খুব একটা খাটো লাগবেনা। চলুন জেনে নেওয়া যাক খাটো মেয়েদের জন্য কিছু ফ্যাশন টিপসঃ খাটো মেয়েদের জন্য ফ্যাশন টিপস *  বিভিন্ন ধরনের ও মাত্রায় এক রঙের পোশাক পড়লে উচ্চতা নিয়ে একটি বিভ্রম তৈরি করে এবং দেখতে বেশি খাটো লাগবে না। এক্ষেত্রে একরঙা পোশাক ব্যবহার করুন।   *  হাই-ওয়েস্ট বা উচ্চ কোমরের নকশার পোশাক যেমন, ট্রাউজার্স, স্কার্টস, হাফপ্যান্ট বেশি হাইয়ের পোশাক। কারন এগুলোতে পা-কে অনেক লম্বা দেখায়। *  উচ্চতা কম হলে পশ্চিমা পোশাক পরতে হয় খুব সাবধানে। একেবারে ছোট টপস, গেঞ্জি, শার্ট পরবেন না। মাঝারি ঝুলের ফতুয়া, গেঞ্জি, টপস ইত্যাদি পরুন। আড়াআড়ি স্ট্রাইপ বা বড় প্রিন্টের চেয়ে লম্বালম্বি সরু স্ট্রাইপের পোশাক বেছে নিন। *...

নাড়ু সংরক্ষন

নাড়ু সংরক্ষন নারকেলের তৈরী যে কোন খাবারই কিছুদিন পর একটি তেলটা গন্ধ। পূজা বা যেকোন সময় নাড়ু বানালে সেটা সাথে সাথে না খেয়ে কিছুদিন সংরক্ষন করা হয়। তাই বেশি দিন সংরক্ষণের জন্য চিনির নাড়ু থেকে গুড়ের তৈরী নাড়ুই বেশি উপযোগী। নাড়ু সংরক্ষন সংরক্ষনের জন্য- * একটি এয়ার টাইট কন্টেইনারে করে আপনি নারকেলের নাড়ু বা সন্দেশ ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন। * বানানোর সময় একটু ছোট এলাচ,কয়েক টুকরো দারচিনি দিয়ে নাড়ুর পাকটা দিলে তেলটা গন্ধ দেরীতে হবে। * চিনির নাড়ু বা সন্দেশ এর মিশ্রনে যে দুধটা দেয়া হয় সংরক্ষণ করে দ্রুত খেয়ে নেয়া স্বাস্থ্যসম্মত। * নাড়ু তৈরির সময় যদি জ্বালটা সঠিক দিতে পারেন এবং এক চিমটি কর্পুর গুড়ো মিশিয়ে দিলেও নাড়ু অনেক দিন ভালো থাকে। * যদি খুব বেশি দিন সংরক্ষণ করতেই চান তবে কড়া পাকের গুড়ের নাড়ু তৈরী করুন। এটি এক-দেড় মাস ভালো থাকবে।

কর্নফ্লাওয়ার (বার্লি)'র অজানা ব্যবহার

কর্নফ্লাওয়ার (বার্লি)'র অজানা ব্যবহার রান্না ছাড়াও কর্নফ্লাওয়ারের রয়েছে আরো অনেক গুণগত ব্যবহার। যেমনঃ কর্নফ্লাওয়ার (বার্লির) অজানা ব্যবহার * কোন কাপড়ে তেলে লেগে গেলে কিছুটা কর্নফ্লাওয়ার ছড়িয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ব্রাশ দিয়ে ঘষে নিন, দেখবেন কত সহজে দাগ উঠে গেছে। *  জানালার কাঁচ পরিষ্কার করার সময় গ্লাস ক্লিনারের পরিবর্তে আট কাপ পানিতে সিকি কাপ কর্নফ্লাওয়ার গুলিয়ে ব্যবহার করে দেখুন গ্লাস একেবারে চকচকে হয়ে যাবে। * চেইন বা ব্রেসলেটে গিঁট লেগে গেলে গিট ছাড়াবার জন্য এলোমেলো টানাটানি না করে তার পরিবর্তে গিঁটের উপর কর্নফ্লাওয়ার ছিটিয়ে গিঁট খোলার চেষ্টা করুন দ্রুত খুলে আসবে। * পোকার কামড়ে ত্বকের জ্বালাপোড়া কমাতে এবং জুতার দুর্গন্ধ দূর করতেও কর্নফ্লাওয়ার ব্যবহার করা যায়। * চুল তেলতেলে হয়ে থাকলে নির্দিধায় চুলের ওপর খানিকটা কর্নফ্লাওয়ার ছিটিয়ে নিন। কয়েক মিনিট রেখে চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নিলেই দেখবেন চুল হয়ে উঠেছে একেবারে ঝরঝরে।