নিজের ব্যবহারের যে জিনিসগুলো অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেয়া উচিত না
প্রাত্যহিক জীবনে আমরা প্রায়ই নিজের ব্যবহারের জিনিস অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেই। এমনি কি কোথায় গেলে হুটহাট অন্যের ব্যবহারের জিনিস ও না বুঝে কাহ সারতে ব্যবহার করে ফেলি। এর মাধ্যমেই কিন্তু ছড়াতে পারে বিভিন্ন রোগ জীবাণু আর এই সকল অভ্যাস থেকে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারি। এমন কিছু জিনিস আছে যে গুলো একান্তই ব্যক্তিগত আর তাই, যত প্রিয়জনই হোক না কেন, কখনোই কাউকে সেগুলো ব্যবহারের জন্য দেয়া উচিত না। চলুন জেনে নেয়া যাক কি কি জিনিস একাই ব্যবহার করা উচিত।১। তোয়ালে, গামছাঃ তোয়ালের প্রধান কাজ সর্বোচ্চ পরিমাণ তরল শুষে নেয়া। বাথরুমের আর্দ্রতার কারণে অনেক সময় তোয়ালে ডাম্প হয়ে যায় এবং তরল শুষে নেয়ার ক্ষমতা কমে যায়। ডাম্প তোয়ালে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যার ফলে একজনের ব্যবহৃত তোয়ালে এবং গামছা কখনোই অন্য আরেকজনের ব্যবহার করা উচিৎ নয়। আপনি হয়ত জানেনও না, আপনার যে আত্মীয় অথবা বন্ধুর ব্যবহৃত তোয়ালে অথবা গামছা থেকে আপনার চর্মরোগ হতে পারে, এটি খুবই সংক্রামক। গামছা, তোয়ালে সব সময় শুষ্ক ও পরিষ্কার রাখা উচিত। তোয়ালে শুকানোর পর আয়রন করে নিতে ভুলবেন না যেন।
৪। চিরুনি, চুলের ক্লিপ, ব্যান্ডঃ চিরুনি, চুলের ক্লিপ বা হেয়ার ব্যান্ডের মাধ্যমে খুব সহজেই একজনের চুলের খুশকি, ছত্রাক ও উকুন অন্যজনের মাথায় চলে যায়। তাই চুলের ক্লিপ, ব্যান্ড এইসব অন্য কাউকে দেয়া নেয়া থেকে বিরত থাকুন।বিশেষ করে বাসায় প্রতেকে আলাদা চিরুনি ব্যবহার করুন। বাইরে যাওয়ার সময় একটি চিরুনি এবং ব্যান্ড নিজের পার্সে রাখুন।প্রোয়জনে বাসায় মেহমানের জন্য বাড়তি চিরুনি,ক্লিপ,ব্যান্ড রাখুন।
৫। ডিওডরেন্টস/ সুগন্ধিঃ যদিও বলা হয়ে থাকে যে ডিওডরেন্টে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে, কিন্তু ডিওডোরেন্ট এর যে অংশটা ত্বকের সংস্পর্শে আসে সেটাতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশী। যেসব ডিওডরেন্টস কিংবা সুগন্ধির মুখ শরীরের সাথে লাগিয়ে ব্যবহার করতে হয় সেগুলো একাই ব্যবহার করুন। কারন এসব সুগন্ধির মুখে ত্বকের ব্যাকটেরিয়া লেগে থাকতে পারে। তাই নিজের কিংবা অন্যের সুগন্ধি শরীরে লাগিয়ে ব্যবহার করলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৬। ম্যানিকিউর ও কসমেটিক্স সামগ্রীঃ নখের ক্লিপার, শেভিং রেজার, জাতীয় জিনিসপত্র অনেকে মিলে ব্যবহার করলে এগুলোর সাথে রক্তের অতি সূক্ষ্ম কণা লেগে থাকে। এসব খালি চোখে দেখা না গেলেও ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় আমরা পরিচিত কারো অথবা বান্ধবীর ফেইস পাউডার, তাদের পাউডার পাফ দিয়েই ব্যবহার করে থাকি। যা কিনা আমাদের ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এলার্জি কিংবা ইনফেকশন থেকে রক্ষা পেতে এসব মোটেও শেয়ার করা উচিত না।
৭। স্কিন কেয়ার সামগ্রীঃ একজন মানুষের মুখের ত্বক সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর। রূপচর্চার জন্য ব্যবহৃত মেকাপ রিমুভার, মেকাপ ব্রাস, তুলি, পাফ এসবের মাধ্যমে ত্বকের ব্যাকটেরিয়া ছড়ায়। অনেকের মুখের ত্বকে ব্রণের সমস্যা থাকে অথবা এলার্জির সমস্যা থাকে। যা কিনা খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। আপনার ব্যবহৃত জিনিস যদি এমন কেউ ব্যবহার করে থাকে, যার ত্বকের সমস্যা রয়েছে তবে সেক্ষেত্রে আপনার ত্বকেও সমস্যা দেখা দিতে শুরু করবে যদি আপনি সেই সকল জিনিস ব্যবহার করে থাকেন। তাই অন্যের স্কিন কেয়ার সামগ্রী ব্যবহার করা উচিত নয়।
৮। ঘরে পড়া জুতো/ স্লিপারঃ ঘরে অতিথি এলেই স্লিপার পড়তে দেয়া হয়। তবে অন্যের ব্যবহৃত স্লিপার দেয়া একদমই উচিত নয়। ব্যবহৃত স্লিপারে যিনি ব্যবহার করেছেন তার পায়ের ঘাম লেগে থাকে। এর মাধ্যমে ছত্রাকের সংক্রমণ হয়। তাই এসব জিনিস শেয়ার করার আগে সাবধান হওয়া উচিত।
একইভাবে নিজের পোশাক কিংবা রুমাল অন্যকে বা কারও পোশাক, রুমাল নিজে ব্যবহার করা ঠিক নয়। শুধু শরীরে এলার্জি বা ইনফেকশন ছড়ানো না বলা হয়, তাঁর জীবনে যে সমস্যা রয়েছে, তা ছড়িয়ে পড়তে পারে আপনার জীবনেও। তথ্যসূত্র ও ছবিঃ ব্রাইট সাইট
মন্তব্যসমূহ