গরমের সময়ের খাবার
অতিরিক্ত গরমে সবারই প্রায় হাঁসফাঁস অবস্থা। এই সময় বহু মানুষ হিটস্ট্রোক, শরীরে জলের অভাব (dehydration) ও নানা সংক্রমণের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এছাড়াও ঠোঁট ও জিভ শুকিয়ে যাওয়া, মাথা ব্যথা, অসম্ভব ক্লান্তি, গা গোলানো ও পেশিতে টান ধরার মতো আরও কয়েক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।![]() |
গরমের সময়ের খাবার। ছবিঃ সংগৃহীত |
গরমে অবধারিতভাবেই শরীর ঘামে। এতে শরীর থেকে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম বের হয়ে যায়। এটা পূরণ করতে গরমে কিছুক্ষণ পর পর একটু একটু করে লেবু পানি পান করতে হবে। একসঙ্গে বেশি নয়, একটু একটু করে কিছুক্ষণ পর পর লেবু পানি পান করতে হবে। সেই সঙ্গে অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি শরবত, ডাবের পানি, ফলের জুস ইত্যাদি খাওয়ার ওপর জোর দিতে হবে।
এ সময়টায় খুব ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন। অতিরিক্ত তেল, মসলা, ভাজাপোড়া খাবার কিংবা বার্গার, স্যান্ডউইচের মতো ফাস্টফুড গরমে হজমে সমস্যা করে। ফলে ডায়রিয়া, গ্যাস্ট্রিক ট্রাবল, বদহজম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পেট পুরে মুরগি, গরু বা খাসির মাংস, তন্দুরি চিকেন কিংবা চিকেন ফ্রাই খেলে শরীরের তাপ বাড়ে, বাড়ে ঘাম। এর বদলে কম তেল-মসলায় রান্না করা পাতলা মাছের ঝোল, টাটকা শাকসবজি খেতে চেষ্টা করুন। গরমে তাজা শাকসবজি ও সালাদ পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে শরীরকে সতেজ রাখে।
এখন আনারস, তরমুজ, বাঙ্গি, কাঁচা আম, পেয়ারা, কলা, মাল্টাসহ বিভিন্ন ফল পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। এসব ফল ত্বক সুন্দর ও মসৃণ রাখে, ক্লান্তি দূর করে। তরমুজ, আনারসে প্রচুর পরিমাণে পানি, খনিজ লবণ ও ভিটামিন রয়েছে। এ ধরনের ফল গরমে ঘামের মাধ্যমে শরীরে থেকে বের হয়ে যাওয়া লবণ ও পানির ঘাটতি পূরণ করে। তরমুজ ও বাঙ্গি রক্তশূন্যতার জন্যও উপকারী। দিনে যতটা সম্ভব তরমুজ, আনারস, বাঙ্গির জুস, কাঁচা আমের শরবতসহ বিভিন্ন ফল ও ফলের জুস খেতে চেষ্টা করুন। এতে শরীর ও ত্বক থাকবে সুস্থ ও সতেজ। ক্লান্তি দূর হবে আর আপনি থাকবেন ফ্রেশ।
সময় সকালের নাশতায় চিড়া, টকদই, কলা ও জুস খাওয়ার যা শরীর ঠান্ডা রাখে। সকালে নাশতায় এক মগ তাজা ফলের জুস শরীরে জমে থাকা টক্সিন দূর করবে। দুপুরের খাবারে রাখুন শসা, টমেটো, গাজর, পুদিনাপাতা, লেটুসপাতা দিয়ে তৈরি করা এক বাটি সালাদ, এক বাটি সবজি, এক টুকরা মাছ, পাতলা ডাল আর এক কাপ ভাত। রাতের খাবারেও মেনুতে রাখুন সালাদ, সবজি আর রান্না করা মাছ। গরমে সপ্তাহে একদিনের বেশি মাংস না খাওয়াই ভালো। সকাল, দুপুর ও রাতের খাবারের মাঝের সময়টায় ফল, জুস, শরবত ইত্যাদি খেতে চেষ্টা করুন।
ফল কিংবা জুস গরমে উপকারী হলেও রাস্তার ধারের লেবুর শরবত, জুস, কাটা ফল একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। এ ধরনের ফল ধোয়া এবং জুস, শরবত তৈরির জন্য যে পানি ব্যবহার করা হয় তা থেকে ও রাস্তার ধুলোময়লা থেকে শরীরে প্রবেশ করে নানারকম জীবাণু। একান্তই যদি খেতে চান তবে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। গরমে বাসি খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন এবং সারা দিনে এক থেকে দুই কাপের বেশি চা-কফি পান করার অভ্যাস থাকলে তা বর্জন করুন। বাইরে বের হলে অবশ্যই এক বোতল পানি সঙ্গে রাখুন।
মন্তব্যসমূহ